অপহরণের ৭ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত শিশু উদ্ধার।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
অপহরনের ৭ ঘন্টার মধ্যে ১৬ মাসের মেয়ে কন্যা জাফনাথ সাইদাকে উদ্ধার করেছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। গতকাল রাতে তাকে মহাখালী ফুটওভার ব্রিজ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জাফনাথের মা উম্মে সালমা ৩৪ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মরত আছেন নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তোলারাম কলেজে। বাবা এডভোকেট মোঃ জহিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্র্যাকটিস করেন। জবা কে নিয়ে সংসারে সুখের অন্ত নাই। দুজনেই কর্মজীবী হওয়ায় জবাকে দেখাশোনার জন্য তারা২৫/২৬ দিন আগে লালমনিরহাট থেকে শারমিন নামে কাজের মেয়ে এনে মোগরাপাড়া ভাড়া বাসায় রাখেন।
পুলিশ জানায়, ১২ সেপ্টেম্বর বিকাল অনুমান ১৬.৩০ ঘটিকায় কাজের মেয়ে শারমিন কৌশলে জবাকে অপহরণ করে। বাক্যে না দেখায় তার মায়ের মনে সন্দেহ হয়। তিনি বাসার আশেপাশে জবা কে খুঁজে না পেয়ে জবার বাবা কে বিষয়টি জানালে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সন্তান হারিয়ে মা-বাবা উন্মাদপ্রায় অবস্থা। একসময় তাদের এক আত্মীয় সোনারগাঁ থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনা অনুসন্ধানে নামে। ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম ( বার) স্যার কে জানালে তিনি দ্রুত জবাকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন।
অপহরণকারীর শারমিনের বাড়ি লালমনিরহাট। তার মা তারই মত রূপগঞ্জ থানার তারাবো বিশ্বরোড এলাকায় মানুষের বাড়িতে কাজ করে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শারমিনের মাকে দ্রুত খুঁজে বের করি। শারমিনের মাকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান শারমিন ঢাকায় মানুষের বাড়িতে কাজ করতো এবং তেজগাঁও সাততলা বস্তি এলাকায় থাকতো।
এইটুকু তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ঢাকায় অভিযান শুরু করি। আমাদের ধারণা ছিল যদি কোন কারণে দ্রুত সময়ে জবাকে উদ্ধার করা না যায় অপহরণকারী জবার বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে।
তেজগাঁও সাততলা বস্তিতে গিয়ে আমরা অপহরণকারীর শারমিন সম্পর্কে তার অপরাধের চাঞ্চল্যকর তথ্য পাই। শারমিন ডান্ডি ইয়াবা গাঁজা নিয়মিত সেবন করেন এবং খারাপ ছেলেদের সঙ্গে তার সখ্যতা।
এই তথ্য পাওয়ার পর আমাদের উৎকণ্ঠা প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আমরা যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে জবাকে উদ্ধার করতে না পারি তাহলে মাদকাসক্ত অপহরণকারী জবা কে অন্যত্র বিক্রি করে দিতে পারে অথবা হত্যা করতে পারে।
তেজগাঁও সাততলা বস্তি কিছু মানবিক লোকজন এবং জবার বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন সকলে মিলে বস্তির এক মাথা থেকে অন্য মাথা চসে ফেলি। এমন সময় বস্তির একজন নাইটগাট সংবাদ দেয় যে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে শারমিনকে ছোট ফুটফুটে একটা মেয়ে সহ দেখা গেছে।
রাত ১টার ঘটিকায় দ্রুত সকলে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে গিয়ে অপহৃত শিশু জাফনাথ সাঈদা জবাকে উদ্ধার করা হয় এবং একই সাথে অপহরণকারী শারমিনকে গ্রেপ্তার করি।০৭(সাত) ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান শেষ হয়।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, একজন সন্তান হারানো পাগল প্রায় মায়ের কোলে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়ার যে আনন্দ তা অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। সকল মা বাবার প্রতি অনুরোধ রইল আমরা আমাদের সন্তানদের প্রতি আরও যত্নবান হই।
ধন্যবাদ জানাই নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ সার্কেল জনাব শেখ বিল্লাল হোসেন স্যার এবং সোনারগাঁ থানার সকল অফিসার এবং ফোর্সদের।